সেনেটারি রিং ও স্লাব তৈরির ব্যবসা
মানুষের জীবনমানের উন্নতির জন্য সরকার যে বিষয়গুলোর উপর জোর দিচ্ছে তার মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার অন্যতম। ধীরে ধীরে মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে আর এর ফলে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারের প্রতি তাদের আগ্রহও বাড়ছে। সহজে ও সস্তায় স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা বানানোর জন্য রিং ও স্লাব প্রয়োজন। পুঁজির পরিমাণ বেশি থাকলে যে কোনো ব্যক্তি রিং ও স্লাব তৈরির ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারে।
স্যানেটারি রিং ও স্লাব তৈরি ব্যবসা
মানুষের জীবন মানের উন্নতির জন্য সরকার যে বিষয়গুলোর উপর জোর দিচ্ছে তার মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার অন্যতম। ধীরে ধীরে মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে আর এর ফলে স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারের প্রতি তাদের আগ্রহও বাড়ছে। সহজে ও সস্তায় স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা বানানোর জন্য রিং ও স্লাব প্রয়োজন।
বাজার সম্ভাবনা
গ্রাম বা শহর সব জায়গাতেই স্বাস্থ্যসস্মত পায়খানার ব্যবহার যেমন দিন দিন বাড়ছে তেমনি রিং, স্লাব এর চাহিদাও বাড়ছে। এক্ষেত্রে রিং, স্লাব তৈরি একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে। রিং ও স্লাব তৈরি করে তা বিভিন্ন ভাবে বাজারজাত করা যায়। যেমন-
- সরাসরি ক্রেতা এসে কিনে নিয়ে যেতে পারে।
- বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে রিং ও স্লাব বসিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নেয়া যেতে পারে।
- বিভিন্ন এনজিওর সাথে যোগাযোগ করে তাদের মাধ্যমে বিক্রি করা যেতে পারে।
- গ্রামের হাটের দিন রিং, স্লাব প্রদর্শন করে ও সুবিধা বর্ণনা করে বিক্রি করা যেতে পারে।
- সম্ভব হলে সরাসরি নিজেই কিস্তিতে রিং স্লাব বিক্রি করা যেতে পারে।
- একটি প্রদর্শনী রিং স্লাব রাখা যেতে পারে,এতে ক্রেতা আকৃষ্ট হবে।
- সেনেটারী পায়খানা ব্যবহারের সুবিধা ও পায়খানা ব্যবহারের পদ্ধতি সহজ ভাষায় লিখে প্রচার করা যেতে পারে।
- ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব নেয়া যেতে পারে।
রিং ও স্লাব তৈরি ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রথমেই বড় আকারের একটি জায়গা নির্বাচন করতে হয়। কারণ ইট-বালি-খোয়া মেশানো, রিং স্লাব তৈরি ইত্যাদি কাজের জন্য বড় আকারের একটি জায়গা দরকার। এছাড়া জায়গাটি চারিদিকে বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া যেতে পারে তাহলে তৈরি করা মালামাল নষ্ট হবার ভয় থাকবে না।
মূলধন
আনুমানিক ৩০০০ টাকার স্থায়ী উপকরণ এবং ১৫০০০ টাকার কাঁচামাল কিনে রিং ও স্লাব তৈরির ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। রিং ও স্লাব তৈরি ব্যবসা করার জন্য নিজের কাছে যদি প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকে তাহলে স্থানীয় ঋণদানকারী ব্যাংক থেকে শর্ত সাপেক্ষে স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।
প্রশিক্ষণ
রিং ও স্লাব তৈরি প্রশিক্ষণের জন্য উপজেলা পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত ‘বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এ তিন মাস ব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান
- স্থায়ী উপকরণ
উপকরণ |
সংখ্যা
|
দর (টাকা)
|
আনুমানিক খরচ (টাকা)
|
প্রাপ্তিস্থান
|
রিং ফ্রেইম
|
২
|
২৫০-২৬০
|
৪.৮৯
|
অর্ডার দিয়ে বানাতে হয়
|
স্ল্যাব ফ্রেইম
|
২
|
৬৫-৬৭
|
১৩০-১৩৪
|
অর্ডার দিয়ে বানাতে হয়
|
স্টীল কনি
|
২
|
১০০-১০৫
|
২০০-২১০
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
শাবল
|
১
|
১৫০-১৬০
|
১৫০-১৬০
|
কামারের দোকান
|
মগ
|
২
|
৩০-৩২
|
৭০-৭৪
|
তৈজসপত্রের দোকান
|
বেলচা
|
২
|
১৩০-১৩৫
|
২৬০-২৭০
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
কোদাল
|
২
|
৮০-৯০
|
১৭০-১৮০
|
কামারের দোকান
|
হাত কন্নী
|
২
|
৬০-৬৫
|
১২০-১৩০
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
কড়াই
|
২
|
৮০-৮৫
|
১৬০-১৭০
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
বালতি
|
২
|
৫৫-৬০
|
১১০-১২০
|
তৈজসপত্রের দোকান
|
প্লাস
|
২
|
৭০-৭৫
|
১৪০-১৫০
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
করাত
|
১
|
৮০-৮৫
|
৮০-৮৫
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
হাতুড়ি
|
২
|
৮০-৮৫
|
১৬০-১৭০
|
কামারের দোকান
|
হামার
|
১
|
১৫০-১৬৫
|
১৫০-১৬৫
|
কামারের দোকান
|
রেলপাতি
|
১
|
২০০-২২০
|
২০০-২২০
|
কামারের দোকান
|
ছেনি
|
২
|
৭০-৭৫
|
১৪০-১৫০
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
সর্বমোট=২৭৪০-২৯০৮ টাকা |
- রিং তৈরির কাঁচামাল
উপকরণ |
পরিমাণ
|
আনুমানিক মূল্য
|
খরচ
|
প্রাপ্তিস্থান
|
সিমেন্ট |
৫.৩২ কেজি
|
২৫০-২৭০ টাকা (প্রতি ব্যাগ)
|
২৫-২৭
|
রড সিমেন্টের দোকান
|
বালু |
০২৭ ঘনফুট
|
৮-১০ টাকা (প্রতি ব্যাগ)
|
২.১৬-২.৭০
|
বালু বিক্রির ডিলার
|
ইটের খোয়া |
০.৫৩ ঘনফুট
|
২০-২২ টাকা (প্রতি ঘনফুট)
|
১০.১৬-১১.১৮
|
ইটের ভাটা
|
পোড়া মবিল |
০.০৮ গ্যালন
|
২৫-২৮ টাকা (প্রতি গ্যালন)
|
২-২.২৪
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
মোট
|
৩০০-৩৩০ টাকা
|
৩৯.৭৬-৪৩.৩০
|
- মজুরি
একজন শ্রমিক দৈনিক ৮ঘন্টা কাজ করে। একটি রিং তৈরি করতে প্রায় ১ ঘন্টা সময় লাগবে। একজন নির্মাণ শ্রমিকের মজুরি ১৩০ টাকা বা এলাকা ভেদে কিছু কম বেশি হতে পারে। সে হিসেবে ১ জন শ্রমিকের ১ ঘন্টার মজুরী হবে ১৬.২৫ টাকা আর একজন সহযোগী শ্রমিকের মজুরী ১০০ টাকা সে হিসেবে ১ ঘন্টার খরচ হয় ১২.৫০ টাকা।
ফলে মোট দাঁড়ায় ২৮.৭৫ টাকা।
তাহলে রিং তৈরি করতে খরচ হয়
কাঁচামাল
|
৩৯.৭৬-৪৩.৩০ টাকা
|
শ্রমিকের মজুরী
|
২৮.৭৫ টাকা
|
মোট=৬৮.৫১-৭২.০৫ টাকা
একটি রিং তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ৬৯-৭২ টাকা।
|
- স্লাব তৈরির খরচ
স্লাবের ২টি অংশ থাকে। একটি অংশের নাম প্যান, অন্যটির নাম পাটাতন। একটি প্যান তৈরির খরচ :
- কাঁচামাল
উপকরণ |
পরিমাণ
|
দর (আনুমানিক)
|
খরচ (আনুমানিক)
|
প্রাপ্তিস্থান
|
সিমেন্ট |
৪.৫ কেজি
|
২৫০-২৭০ টাকা
|
২২
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
বালু |
.১১ ঘনফুট
|
৮-১২ টাকা (প্রতি ঘনফুট)
|
.৮৮
|
বালি বিক্রির ডিলার
|
সাইফুন |
১টি
|
২৫-২৭ টাকা (১টি)
|
২৫
|
হার্ডওয়ারের দোকান
|
মোট=৪৮.০ টাকা
|
মজুরি
প্যান তৈরি করতে ১ জন কারিগর ও ১ জন সহযোগি লাগে। ১টি প্যান তৈরি করতে সময় লাগে ১ ঘন্টা। সে হিসেবে একটি প্যান বানাতে খরচ পড়ে প্রায় ২৮.৭৫ টাকা।
একটি প্যান বানাতে মোট খরচ পড়ে
কাঁচামাল
|
৪৮টাকা
|
মজুরী
|
২৮.৭৫ টাকা
|
মোট=৭৬.৭-৮০.৭৫ টাকা
|
তাহলে দেখা যাচ্ছে একটি প্যান বানাতে, মোট আনুমানিক খরচ পড়ে গড়ে প্রায় ৭৭ টাকা।
স্লাবের পাটাতন বানানোর খরচ
কাঁচামাল
উপকরণ |
পরিমাণ
|
দর (আনুমানিক) টাকা
|
আনুমানিক মূল্য (টাকা)
|
প্রাপ্তিস্থান
|
সিমেন্ট |
৬.৪০ কেজি
|
২৫০-২৭০ প্রতি বস্তা
|
৩৩.৮৯-৩৬.৬০
|
রড সিমেন্টের দোকান
|
বালু |
০.৩৩ ঘনফুট
|
৮-১০ প্রতি ঘনফুট
|
২.৬৪-৩.৩০
|
বালু বিক্রির দোকান
|
খোয়া |
০.৬৬ ঘনফুট
|
২০-২২ প্রতিঘনফুট
|
১৩.২০-১৪.৫২
|
ইটের ভাটা
|
৮নংএম.এস তার |
১ কেজি
|
৩০-৩৩ কেজি
|
৩০-৩৬
|
হার্ডওয়ায়েরর দোকান
|
মোট=৭৯.৭৩-৮৭.৪২ টাকা
|
১টি স্লাবের পাটাতন বানাতে ১ জন নির্মাণ শ্রমিক ও ১ জন নির্মাণ সহযোগী শ্রমিকের ১ ঘন্টা সময় লাগে। অর্থাৎ মোট মজুরি হবে-২৮.৭৫ টাকা।
কাঁচামাল
|
৭৯.৭৩ টাকা
|
মজুরী
|
২৮.৭৫ টাকা
|
মোট=১০৮.৪৮ টাকা
|
সুতরাং একটি স্লাব বানাতে মোট খরচ পড়ে
প্যান
|
৭৭.০০ টাকা
|
পাটাতন
|
১০৮.৪৮ টাকা
|
মোট=১৮৫.৪৮ টাকা
|
রিং ও স্লাব তৈরির কতকগুলো ধাপ আছে। এ ধাপগুলো নিচে আলোচনা করা হল:
১। রিং তৈরির জন্য যে জায়গাটিতে ডাইস বসানো হবে সেখানে কিছু বালি বিছিয়ে নিতে হবে।
|
২। প্রথমে বড় ডাইসটি বালির উপর বসাতে হবে। ডাইসটি ৩০ ইঞ্চি গোলাকার হবে এবং লম্বায় ১২ ইঞ্চি হতে পারে। এবার ডাইস এর ভেতরের অংশে ব্রাশ দিয়ে মোবিল লাগাতে হবে।
৩। আরেকটি ছোট আকারের ডাইস নিতে হবে। সেটি লম্বায় ১২ইঞ্চি এবং ২৭ ইঞ্চি গোলাকার হতে পারে। এবার ডাইসটির বাইরের অংশে মোবিল লাগাতে হবে। ছোট ডাইসটি বড় ডাইসের মাঝে বসাতে হবে। চারিদিকে যেন সমান পরিমাণ ফাঁকা থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে। ২টি ডাইস এক সাথে তারের ক্লিপ দিয়ে আটকে দিতে হবে।
কাচাঁমালের মিশ্রণ তৈরি
১।পরিমাণমত বালি চালুনী দিয়ে ঢেলে পরিস্কার করে নিতে হবে।
২। খোয়াগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে ময়লামুক্ত করতে হবে।
৩। এবার ২ ভাগ বালি ও এক ভাগ সিমেন্ট মিশাতে হবে। তারপর ধুয়ে রাখা খোয়াগুলোর সাথে সিমেন্ট বালি মিশাতে হবে।
৪। নিদির্ষ্ট পরিমাণ পানি দিয়ে কোদালের সাহায্যে এ উপাদানগুলো ভাল ভাবে মিশাতে হবে।
|
- ঢালাই
১। উপকরণগুলো ভালভাবে মেশানোর পর কড়াই তুলে দুই ডাইসের ফাঁকা জায়গায় ঢালতে হবে।
২। মশলাগুলো চারদিকে সমানভাবে ঢালতে হবে। এবার গোলাকার তারের রিং বানিয়ে ছাঁচের মধ্যে বসিয়ে দিতে হবে।
৩। এরপর আরো কিছু মশলা ৪ইঞ্চি উঁচু করে দিতে হবে এবং একটি তারের রিং দিতে হবে।
৪। আবার একটি তারের রিং ছাঁচের মাঝে পরিয়ে দিতে হবে।
৫। এর উপর পুরু করে সিমেন্ট বালির মিশ্রণ ঢেলে দিতে হবে।
- ডাইস খোলা
ঢালাইটি জমতে কিছু সময় লাগবে। ৩০-৪০ মিনিট পর ২ ডাইসের ক্লিপটি আলগা করে দিতে হবে। এর পর ডাইস ২টি সাবধানে আলাদা করে নিতে হবে।
ঢালাই এর পর ২৪ ঘন্টা পার হলে মোটামুটি ভাবে রিংটি শক্ত হয়ে যাবে। এবার রিংটিকে দিনে ৩/৪ বার করে ৬/৭ দিন ভিজাতে হবে। বস্তা ভিজিয়ে রিং টিকে পেঁচিয়ে রাখতে হবে।
- স্লাব তৈরির নিয়ম
রিং তৈরির মত স্লাব তৈরির ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কিছু ধাপ আছে। স্লাবের মধ্যে প্যান ও প্যানের চারদিকের পাটাতন এই ২টি অংশ থাকে। ২টি অংশ আলাদা-আলাদা তৈরি করে এক সাথে জুড়ে দেওয়া হয়।
প্যান তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে বালি ও সিমেন্টের মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হয়। এক্ষেত্রে
১। চালুনী দিয়ে চালা বালি ও সম পরিমাণ সিমেন্ট মিশাতে হবে।
২। এবার এর মধ্যে পানি মিশাতে হবে তবে পানি যেন বেশি না হয়। মিশ্রণটি যাতে বেশি নরম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- প্যান তৈরির নিয়ম
১। ২৪ ইঞ্চি লম্বা ও ৬ইঞ্চি উচ্চতায় ইট বসাতে হবে।
২। এবার এর মাঝের অংশে কিছু বালি ফেলতে হবে। এ উচ্চতা ৬ইঞ্চি হতে হবে।
৩। প্যানের একটি ডাইস বালির মধ্যে চেপে বসাতে হবে।
৪। ডাইসের চার পাশে বালি ও পানি ছিটিয়ে বসিয়ে দিতে হবে।
৫। প্যানের চারপাশের বালি সমান উচ্চতায় থাকতে হবে এবং দরমুজ দিয়ে শক্ত ভাবে বসিয়ে দিতে হবে।
৬। এবার খুব ধীরে ধীরে বালির মধ্য থেকে ডাইসটি তুলে আনতে হবে।
৭। বালির মধ্যে ডাইসের যে নকশা তৈরি হবে সেখান থেকে বাড়তি বালি তুলে ফেলতে হবে। এর পর প্যানের গোল অংশটিতে একটি রিং দিয়ে দিতে হবে ।
৮। সিমেন্ট বালির মিশ্রনটি কর্ণি দিয়ে ডাইসের চারপাশে ১/২ইঞ্চি পুরু করে লাগাতে হবে।
৯। মিশ্রণটি শেষ হলে ছোট কর্ণি দিয়ে ঘষে ঘষে মসৃণ করতে হবে। এছাড়া মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিয়ে ঘষতে হবে।
১০। ২৪ ঘন্টা পর বালির মধ্যে থেকে প্যানটি তুলে আনতে হবে। প্যানটি শক্ত করতে প্রতিদিন ৩/৪বার করে ৫-৭দিন পানি দিয়ে ভিজাতে হবে।
- স্লাব (প্যানের চারদিকের পাটাতন) তৈরির নিয়ম
স্লাব তৈরির কতকগুলো ধাপ রয়েছে।
১। স্লাব তৈরি করতে মাটিতে গর্ত করে প্যানটি বসাতে হবে, তবে সেটি মাটি থেকে ১ ইঞ্চি উঁচু হয়ে থাকতে হবে।
২। প্যানটি মাঝখানে রেখে ৩১x ৩১ বর্গাকারে চারদিকে চারটি কাঠ দিয়ে ফ্রেম তৈরি করতে হবে।
৩। এবার মাঝের জায়গাটিতে একটি মোটা কাগজ বিছাতে হবে।
৪। এর পর ৪ ভাগ খোয়া, ২ ভাগ বালি ও ১ভাগ সিমেন্ট মিশাতে হবে। মিশ্রনটি ঐ কাগজের উপর ১/২ ইঞ্চি পুরু করে বিছাতে হবে।
৫। এবার এর উপর লম্বা লম্বা কয়েল রড বুনে দিতে হবে।
৬। এর উপর আবার মশলা ঢালতে হবে এবং মসৃণ করে বিছিয়ে দিতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে চারদিকে অংশটি যেন প্যান থেকে উচু হয়ে না যায়।
এবার পা-দানীর ডাইসটি প্যানের দুই পাশে বসাতে হবে। এর মধ্যে সিমেন্ট বালির মিশ্রণ ঢালতে হবে। তার পর শুকনা বালি ছিটিয়ে দিতে হবে। পা-দানী যেন পিচ্ছিল হয়ে না যায় সেজন্য কাঠি দিয়ে দাগ টেনে দিতে হবে। ২/৩ দিন পানি দিয়ে ভিজাতে হবে। ৩/৪ দিন পর স্লাবটি শক্ত হয়ে যাবে তখন চারদিকের মাটি সরিয়ে ফেলে আস্তে আস্তে স্লাবটি উঠাতে হবে।
সাইফুন লাগানো
বাজারে সাইফুন কিনতে পাওয়া যায়। প্লাস্টিকের সাইফুনের ২ দিকে ২টি মুখ থাকে। বড় মুখটি প্যানের উল্টা দিকে সিমেন্ট দিয়ে আটকে নিতে হবে।
এক্ষেত্রে সাইফুনের মুখের মধ্যে কিছু সিমেন্ট লেপে দিতে হবে এবং প্যানের উল্টো দিকের মুখের চারদিকে সিমেন্ট লাগাতে হবে। এরপর সাইফুনটি প্যানের নলের মধ্যে পরিয়ে দিতে হবে। শক্ত হবার জন্য ৩/৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে এবং প্রতি দিন ৩/৪ বার পানি দিয়ে ভেজাতে হবে।
- সাবধানতা
- যন্ত্রপাতির ব্যবহার সাবধানে করতে হবে।
আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ
- খরচ
একটি রিং বানাতে খরচ
|
৭০ টাকা
|
একটি স্লাব বানাতে খরচ
|
১৮৫ টাকা
|
স্থায়ী যন্ত্রপাতির অবচয় (ক্ষতি) বাবদ খরচ
|
৫ টাকা
|
একটি রিং স্লাব তৈরিতে মোট খরচ=২৬০ টাকা
|
৯
একটি পূর্ণ পায়খানা যদি ধরা যায় ৬টি রিং দিয়ে তৈরি হয় তাহলে মোট খরচ
৬টি রিং
|
৪২০ টাকা
|
১টি স্লাব
|
১৮৫ টাকা
|
যন্ত্রপাতি অবচয় (ক্ষতি) বাবদ
|
৫ টাকা
|
মোট=৬১০ টাকা
|
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, টাঙ্গাইল, সেপ্টেম্বর, ২০০৯
- আয়
একটি রিং স্লাবের মূল্য
|
৯৫ টাকা
|
একটি স্লাবের মূল্য
|
২২০ টাকা
|
মোট=৩১৫ টাকা
|
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, টাঙ্গাইল, সেপ্টেম্বর, ২০০৯
- লাভ
বিক্রি
|
৩১৫ টাকা
|
খরচ
|
২৬০ টাকা
|
লাভ=৫৫ টাকা
অর্থাৎ লাভ ৫৫ টাকা। তবে সময় ও স্থানভেদে এর কম বা বেশি লাভ হতে পারে।
|
স্থায়ী উপকরণগুলো একবার কিনলে অনেকদিন ধরে কাজ করা যাবে। ব্যবসার শুরুতেই এ খরচটি করতে পারলে পরবর্তীতে শুধু কাঁচামাল কিনে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন